![](https://bdnuclear.energy/wp-content/uploads/2024/05/IMG_5401-scaled.jpeg)
বিশ্ব যুব উৎসব ২০২৪-এ ১০,০০০ রাশিয়ান অংশগ্রহণকারী সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ২০,০০০ ইয়াং লিডার অংশগ্রহণ করেছিল। বেশিরভাগ কিশোররা প্রথমবারের মতো এতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিল। এই বছর, বাংলাদেশ গর্বের সাথে প্রায় ৯০ জন প্রতিনিধি বিশ্ব যুব উৎসবে পাঠিয়েছে, যা বিশ্ব মঞ্চে উল্লেখযোগ্যভাবে বাংলাদেশের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে।
তথ্য কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. আহসান হাবিব বলেছেন, “রাশিয়ায় বিশ্ব যুব উৎসবে যোগ দেওয়া একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা ছিল, সোচির অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে বিস্মিত করেছে। সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত বিভিন্ন শিক্ষামূলক এবং চিত্তাকর্ষক অনুষ্ঠানে অনেক কিছু শেখার সুযোগ ছিল, পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে মেশার ফলে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পেরেছি। ‘ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিবাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট’ এর ধারণাটি আমার কাছে মনোমুগ্ধকর লেগেছে। পাশাপাশি রোসাটমের চিত্তাকর্ষক ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি শোগুলি আমাকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছিল, এবং সবশেষে বলতে গেলে বিশ্ব যুব উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি আমার মনে দাগ কেটে দিয়েছে।”
বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীরা উৎসব চলাকালীন সময় সোচি পার্কে অবস্থিত অ্যাটোমারিয়াম নামক একটি তথ্য কেন্দ্র ঘুরে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। এটি ঘুরে দেখার মাধ্যমে তারা অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল এবং এর পাশাপাশি বিজ্ঞানের মৌলিক আইনগুলিকে নতুন করে দেখা ও জানার সুযোগ পেয়েছিল। সেখানে তারা, হ্যাড্রন কোলাইডার, টেসলা কয়েল, বিভিন্ন মাধ্যমে আলোর চলার প্রক্রিয়া ও ধরণ, ফ্যারাডের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশন সূত্র, থেরেমিনি মুগ ডিভাইস, সৌরজগতের মডেল, গ্যালিলিও গ্যালিলি এর পিসা টাওয়ার এক্সপেরিমেন্ট, হলোগ্রাফিক মডেল, এবং ম্যাগলেভ ট্রেনসহ বিজ্ঞানের আরও মৌলিক আইনগুলির বাস্তব রূপ দেখে মুগ্ধ হয়েছিল। সবকিছু মিলিয়ে এটি একটি বিস্ময়কর এবং অসাধারণ অভিজ্ঞতা, যা তাদের বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণাকে সমৃদ্ধ করেছে এবং বিজ্ঞানের বিস্ময়কর অজানা জগৎ সম্পর্কে কৌতূহল জাগিয়ে তুলেছে।
এদিকে সিরিয়াস ফেডারেল টেরিটরিতে (যেখানে ২০১৪ সালে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছিল) ১-৭ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সাত দিনের এই উৎসবের পুরোটা সময় জুড়ে রোসাটমের স্ট্যান্ডে ব্যাপক জনসমাগম হয়েছিল। ২,০০০ বর্গমিটারের বেশি বিস্তৃত এই প্রদর্শনীটি ১৮০ টি দেশের ১২,০০০ জনেরও বেশি দর্শনার্থী পরিদর্শন করেছিল। উপরন্তু, রোসাটমের ম্যানেজার এবং বিশেষজ্ঞদের দ্বারা আয়োজিত ১২০টি ইভেন্টে ৮,০০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। রোসাটম যেসমস্ত দেশগুলিতে কাজ করছে সেসমস্ত দেশের রেসিপি দিয়ে তৈরি ২,৪০০ লিটারের বেশি চা পান করেছেন দর্শনার্থীরা এবং অ্যাটমিক ফ্লিটের ক্যাপ্টেনের সাথে ১,৫০০টি সেলফি তুলেছেন।
বিশ্ব যুব উৎসবের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২০০০ জন রোসাটম আয়োজিত একটি বৈজ্ঞানিক এবং শিক্ষণীয় অভিযানে অংশগ্রহণ করে যা রোসাটম আর্কটিক এক্সপিডিশন নামে পরিচিত। এর মধ্য থেকে ১৫ জন অংশগ্রহণকারী নিউক্লিয়ার আইসব্রেকারে চড়ে উত্তর মেরুতে অভিযান শুরু করার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। বাছাই প্রক্রিয়া আর্কটিক দিবসে (ফেব্রুয়ারি ২৮) শুরু হয়েছিল ও চূড়ান্ত বাছাই পর্ব ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং সবশেষে ৬ মার্চ ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৫ জন বিজয়ীদের মধ্য একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে কৌশিক আহমেদ নিউক্লিয়ার আইসব্রেকারে চড়ে উত্তর মেরুতে অভিযানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
এ ব্যাপারে কৌশিক আহমেদ তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেছেন, “আমি রাশিয়ার সোচিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব উৎসব, ২০২৪-এ অংশগ্রহণ করেছি, সেখানে আমি রোসাটম দ্বারা আয়োজিত আর্কটিক অভিযান সম্পর্কে জানতে পারি। পরমাণু বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহ থাকায়, আমি অবিলম্বে আবেদন করি এবং অনলাইনে প্রাথমিক নির্বাচন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করি। এরপর কুইজ, উপস্থাপনা এবং একটি চূড়ান্ত বক্তৃতা সহ অফলাইনে একাধিক প্রতিযোগিতামূলক ধাপ সফলভাবে পেরিয়ে উত্তর মেরুতে অভিযানে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হই। এই অভিযানের জন্য নির্বাচিত হতে পেরে আমি খুশি, এবং অভিযান শুরু করার জন্য উত্তেজিত”।