প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন
কিছু লিখুন
প্রেরণ করুন
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ৩০% সম্পন্ন হয়েছে
১২.০৭.২০২০
রূপপুরে কাজ চলছে ‘পুরোদমে’, অগ্রগতি ৩০%
করোনাভাইরাস নামক বৈশ্বিক মহামারীর মধ্য দিয়েও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ৩০% সম্পন্ন হয়েছে।

প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে বিদেশি জনবলও বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পটির পরিচালক মো. শৌকত আকবর। তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা কাজের গতি আগের চেয়ে বাড়িয়েছি। রিয়্যাক্টর ভবনের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে এবং সকল কার্যক্রম সময়সূচী অনুযায়ী চলছে।”

সরকার আশা করছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে এবং সরাসরি জাতীয় গ্রীডে সংযুক্ত হবে।

আট হাজারের মত কর্মী এবং প্রকৌশলী বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত আছেন, যার মধ্যে ১৮০০ জন রাশিয়ানসহ বিদেশি কর্মী এবং প্রকৌশলী রয়েছেন প্রায় দুই হাজার।

মহামারীর কারণে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের মত কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি থমকে যায়। তবে এই মহামারীর মধ্য দিয়েও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি প্রসঙ্গে শৌকত আকবর বলেন, “তিন রকম পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। কাজে যোগ দেওয়ার আগে প্রতিদিন তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। কারো তাপমাত্রা বেশি থাকলে ৭ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। এরপর আবার পরীক্ষা করে সুস্থ মনে হলে তাকে কাজে যোগদান করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এরপর কাজ করার সময়ও তাদের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে। রাশিয়ানদের এবং আমাদের আলাদা মেডিকেল টিম আছে। কাজ করার সময় কারো তাপমাত্রা যদি বেশি থাকে, বাধ্যতামূলকভাবে তাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।”

সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানতে ২৪ ঘন্টার জন্য সময়সূচি করে কর্মীদের আলাদা গ্রুপ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক। ক্যান্টিনে বসে খাওয়ার ক্ষেত্রেও দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে।

কোয়ারেন্টিনের জন্য আলাদা আবাসনের এবং থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। বিদেশ থেকে যারা আসছেন, তাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট সঙ্গে আনতে হচ্ছে। আসার পর ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। কোয়ারেন্টিন শেষে পরীক্ষা করে কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। নতুন কর্মী, সে দেশি বা বিদেশি যেই হোক, করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করেই কাজে যোগ দিতে হয়।

কর্মরতদের মধ্যে কারো করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়লে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে- এ প্রশ্নের উত্তরে শৌকত আকবর বলেন, “যদি ভেতরে কারও অসুস্থতা ধরা পড়ে, তাহলে আমরা ওই শিফটের সবার কাজ বন্ধ রাখছি। সবাইকে ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখছি। নতুন গ্রুপ করে ওই শিফট আবার চালু করা হচ্ছে।”

এসব ব্যবস্থা নেয়ার কারণে নির্মাণ কাজে এখনও কোনো বাধার সৃষ্টি হয়নি বলে জানান প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর। তিনি আরও জানান, “মহামারীতে অবরুদ্ধ অবস্থার সময় পরিবহন ও আমদানির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হলেও কাজের ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়েনি।”

পাবনার রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবকি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির জন্য ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের বছর জুলাইয়ে দ্বিতীয় চুল্লির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর ৬৮ মাসের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল স্থাপনা নির্মাণের কথা রয়েছে রাশিয়ান কোম্পানি এটমস্ট্রয়এক্সপোর্টের।