প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন
কিছু লিখুন
প্রেরণ করুন
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রস্তুতকৃত ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম এর প্রথম ব্যাচ ঢাকায় পৌঁছেছে
২৮.০৯.২০২৩

বাংলাদেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (এনপিপি) জন্য প্রস্তুতকৃত পারমাণবিক জ্বালানি বা ইউরেনিয়ামের প্রথম ব্যাচ ঢাকায় পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাশিয়া থেকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউরেনিয়ামের এই ব্যাচ এসেছে।

রোসাটমের জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টিভিইএল এর একটি প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার সাইবেরিয়াতে অবস্থিত নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্টে (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করছে। রাশিয়ার ওই কারখানা থেকে বিশেষ বিমানে জ্বালানি ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হয়। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সড়কপথে রূপপুর এনপিপি প্রকল্প এলাকায় নেওয়া হবে। ইউরেনিয়াম পরিবহনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর এনপিপি প্রকল্প এলাকায় এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ সশরীরে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশের পক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এর কাছে হস্তান্তর করবেন।

রেফারেন্স: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মোট ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি VVER-1200 চুল্লি দিয়ে সজ্জিত যা রাশিয়ান ডিজাইনের অধীনে ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখের সাধারণ চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে নির্মিত হচ্ছে। রাশিয়ার করা নকশায় বাংলাদেশের প্রথম এনপিপির জন্য VVER-1200 চুল্লি নির্বাচন করা হয়েছে, যেটি নভোভোরোনেজ এনপিপির দুটি ইউনিটে সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। এটি ৩+ প্রজন্মের একটি আধুনিক নকশা, যা সকল আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম।

রাশিয়া ধারাবাহিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির সাথে সহযোগিতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন করছে। বাহ্যিক বিধিনিষেধ সত্ত্বেও, দেশীয় অর্থনীতি তার রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধি করছে এবং সারা বিশ্বে পণ্য, পরিষেবা এবং কাঁচামাল সরবরাহ করছে এছাড়া জ্বালানি খাতে বড় বড় আন্তর্জাতিক প্রকল্পের বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে। রোসাটম এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলি এই কাজে সক্রিয় অংশ নিচ্ছে।

রোসাটমের টিভিইএল ফুয়েল কোম্পানি (রোসাটমের জ্বালানি বিভাগ) পারমাণবিক জ্বালানি তৈরি, ইউরেনিয়াম রূপান্তর ও সমৃদ্ধকরণ, গ্যাস সেন্ট্রিফিউজের উৎপাদন, সেইসাথে গবেষণা এবং নকশা সংস্থাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। রাশিয়ান পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির জন্য একমাত্র পারমাণবিক জ্বালানি হওয়ার কারণে, টিভিইএল ১৫টি দেশে মোট ৭৫টি পাওয়ার রিঅ্যাক্টর, বিশ্বের নয়টি দেশে গবেষণা রিঅ্যাক্টর, সেইসাথে রাশিয়ান পারমাণবিক ফ্লিটের পরিবহণ রিঅ্যাক্টরে জ্বালানি সরবরাহ করে। বিশ্বের প্রতি ছয়টি পাওয়ার রিঅ্যাক্টরের মধ্যে একটি টিভিইএল এর জ্বালানি দ্বারা চালিত হয়।
রোসাটম এর জ্বালানি বিভাগ বিশ্বের বৃহত্তম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনকারী, সেইসাথে স্থিতিশীল আইসোটোপের জন্য বিশ্ববাজারের পথ প্রদর্শক। জ্বালানি বিভাগ সক্রিয়ভাবে রসায়ন, ধাতুবিদ্যা, শক্তি সঞ্চয় প্রযুক্তি, থ্রিডি প্রিন্টিং, ডিজিটাল পণ্য, সেইসাথে পারমাণবিক সুবিধাগুলি বাতিল করার ক্ষেত্রে নতুন ব্যবসা বিকাশ করছে।

রোসাটম স্টেট কর্পোরেশন একটি বিশ্বব্যাপী পথপ্রদর্শক এবং বিশ্বের একমাত্র কোম্পানি হিসাবে স্বীকৃত যা বিদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন বাস্তবায়ন করেছে। রাশিয়ান ডিজাইনের মোট ১০৬টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৮০টি ভিভিইআর চুল্লি দিয়ে গঠিত। বর্তমানে, রোসাটম ইন্টারন্যাশনাল অর্ডার পোর্টফোলিওতে ৩৪টি ইউনিট ভিভিইআর রিঅ্যাক্টর দিয়ে গঠিত যা ১১টি দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে।