প্রিসাইজ এনার্জি অলিম্পিয়াড ২০২৫ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যা তরুণ মেধাবীদেরকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং টেকসই জ্বালানির পথে উদ্বুদ্ধ করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ১৩ থেকে ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত। প্রাথমিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ১৩–১৮ অক্টোবর, ফাইনাল পর্ব ২৪–২৬ অক্টোবর, এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ২৬ অক্টোবর।
এই বছরের অলিম্পিয়াডের লক্ষ্য ছিল পরিধি বৃদ্ধি করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (এনপিপি) অঞ্চলের ৫০টি বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা, যেখানে প্রায় ৩,০০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ২০২৩ সালের সংস্করণের সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে, এবারের প্রতিযোগিতা তরুণ প্রজন্মের পারমাণবিক বিজ্ঞান, জ্বালানি উদ্ভাবন এবং আন্তঃবিষয়ক শিক্ষার প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহকে প্রতিফলিত করেছে।

অলিম্পিয়াডটি দুইটি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়:
প্রাথমিক পর্ব:
বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তিনটি বিষয়ে — পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, এবং গণিত — পরীক্ষা দেয়, যার মাধ্যমে তাদের মৌলিক জ্ঞান মূল্যায়ন করা হয়। ফলাফল পর্যালোচনার পর, শিক্ষার্থীদের সক্ষমতার ভিত্তিতে ফাইনাল পর্বের জন্য উপযুক্ত বিষয়ে নির্বাচিত করা হয়। ৬০০-এরও বেশি শিক্ষার্থী অলিম্পিয়াডের ফাইনাল পর্বে উত্তীর্ণ হয়।
ফাইনাল পর্ব:
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয়ের কঠিন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, আর বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা জটিলতা ও বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সাধারণ পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ পর্যায়ে পারমাণবিক শক্তির আঞ্চলিক উন্নয়ন ও শিক্ষায় ভূমিকা নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ন্যাশনাল রিসার্চ নিউক্লিয়ার ইউনিভার্সিটি (এমইপিএইচআই, রাশিয়া)-এর প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন।
শিক্ষাগত প্রতিযোগিতার পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারীরা “ইঞ্জিনিয়ারিং ক্রিয়েটিভিটি অলিম্পিয়াড”-এ অংশ নেয় — এটি একটি দলভিত্তিক প্রতিযোগিতা, যেখানে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ে বাস্তবসম্মত সমস্যা সমাধান, উদ্ভাবন এবং পরীক্ষামূলক দক্ষতা মূল্যায়ন করা হয়।

ফাইনাল পর্ব শেষে, মোট ২৬ জন অংশগ্রহণকারীকে ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হয়। অনুষ্ঠানে মধ্যাহ্নভোজ ও সাংস্কৃতিক পর্বেরও আয়োজন ছিল, যেখানে অংশগ্রহণকারী, অতিথি ও আয়োজকরা সঙ্গীতানুষ্ঠান উপভোগ করেন।
বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান করেন — আসমা বেগম, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, রূপপুর এনপিপি, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন; মো. আলিউজ্জামান, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের প্রধান, রূপপুর এনপিপি, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন; আলেকজান্দ্র বেইবাকভ, ডেপুটি জেনারেল ডিরেক্টর, অ-লাভজনক সংস্থা এনার্জি অব দ্য ফিউচার; ড. আলেকজান্ডার নাখাবভ, পিএইচডি, সহযোগী অধ্যাপক ও উপপ্রধান, পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, অবনিনস্ক ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যাশনাল রিসার্চ নিউক্লিয়ার ইউনিভার্সিটি (এমইপিএইচআই, রাশিয়া)।

প্রথাগতভাবে, এই অলিম্পিয়াডের আয়োজন করে সর্বসাধারণ পারমাণবিক তথ্য কেন্দ্র, ঈশ্বরদী এবং অ-লাভজনক সংস্থা “এনার্জি অব দ্য ফিউচার”।
সহ-আয়োজক ও অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি), রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন “রোসাটম”, এবং ন্যাশনাল রিসার্চ নিউক্লিয়ার ইউনিভার্সিটি (মস্কো ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্স ইনস্টিটিউট, রাশিয়া)।
বিজয়ীদের তালিকা:PEO 2025- Winners
(ছবি কৃতজ্ঞতা: অ্যাটম মিডিয়া, এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট, রোসাটম)
