প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন
কিছু লিখুন
প্রেরণ করুন
সর্বোচ্চ সংখ্যক অংশগ্রহণকারী দেশ ও চুক্তি স্বাক্ষরের সংখ্যা বিবেচনায় ফোরাম অ্যাটমএক্সপো-২০২৪ বিগত সময়ের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে
২৮.০৩.২০২৪

রাশিয়ার সোচি শহরের সিরিয়াস ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ১৩ তম আন্তর্জাতিক ফোরাম অ্যাটমএক্সপো-২০২৪, ২৬ মার্চ সমাপ্ত হয়েছে। পারমাণবিক শিল্পে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই অনুষ্ঠানে ৭৫টি দেশের রেকর্ড ৪,৫০০ জন অংশগ্রহণ করেছিল – যা ২০২২ সালের তুলনায় ১০ গুণ বেশি। ২৫,৫০০ বর্গ মিটার প্রদর্শনী স্থান জুড়ে ২০০ টিরও বেশি কোম্পানি তাদের প্রদর্শনী উপস্থাপন করেছে। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি পারমাণবিক শিল্প ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা ব্যবসায়ী, সরকারি ও বেসরকারি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের একত্রিত করেছিল।

অ্যাটমএক্সপো-তে রেকর্ড সংখ্যক ৭৫টি দেশের অংশগ্রহণ, কৌশলগত উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা এবং নিউক্লিয়ার এনার্জি সেক্টরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদার করার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ফোরামের প্রাসঙ্গিকতাকে জোরদার করেছে। ফোরামটি বুর্কিনা ফাসো, মালি, নাইজার এবং ইরাক থেকে প্রথমবারের মতো সংযুক্ত হওয়া অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়েছে, এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের আকৃষ্ট করতে সক্ষমতা অর্জন করেছে।

ফোরামটিতে স্বাক্ষরিত চুক্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, ৮০ টিরও বেশি বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে যা ২০২২ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এই অপ্রতিরোধ্য প্রদর্শনটি যে আগ্রহ নিয়ে নিউক্লিয়ার এনার্জি সেক্টরে রাশিয়ার সাথে তার পার্শ্ববর্তী এবং দূরবর্তী দেশগুলির প্রতিনিধিরা সহযোগিতার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে তার গুরুত্বের উপর জোর দেয়। ফোরামটি আফ্রিকার বুর্কিনা ফাসো এবং রোসাটমের মধ্যে একটি নতুন অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জন করেছে। ২৫ মার্চ অ্যাটমএক্সপো চলাকালীন, রাশিয়ান-বেলারুশিয়ান সহযোগিতার বিস্তৃত প্রোগ্রাম, নিউক্লিয়ার নন-পাওয়ার এবং নন-নিউক্লিয়ার প্রকল্পগুলি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ফোরামের অধিবেশনগুলিতে জলবায়ু পরিবর্তন, বিকল্প শক্তির উৎসের (পারমাণবিক শক্তি সহ) ব্যবহার এবং পারমাণবিক ওষুধ প্রকল্পগুলির অগ্রগতি সম্পর্কে বেশি আলোকপাত করা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, একটি নিউক্লিয়ার মেডিসিন সেন্টার নির্মাণের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করতে রোসাটম নিকারাগুয়ার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

চতুর্থ প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ছিল অনুষ্ঠানের মূল বিষয়গুলির মধ্যে একটি। বিশেষভাবে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এই প্রযুক্তিকে অগ্রসর বা উন্নত করার লক্ষ্যে গৃহীত প্রকল্পগুলিকে উপস্থাপন করা হয়, যা ফোরামের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল৷ উল্লেখযোগ্যভাবে, অ্যাটমএক্সপো-২০২৪ এর একটি বিশেষ হাইলাইট ছিল বিআরইএসটি-ওডি-৩০০ চতুর্থ-প্রজন্মের রিঅ্যাক্টরের জন্য উদ্ভাবন করা পারমাণবিক জ্বালানি এর পাইলট উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যা টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল। টমস্ক অঞ্চলের সেভারস্কে অনুষ্ঠিত মাইলফলক স্থাপন করা এই অনুষ্ঠানে পারমাণবিক প্রযুক্তি ও শিল্পের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।

ফোরামের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের মূল বিষয় ছিল টু-কমপোন্যেন্ট নিউক্লিয়ার পাওয়ার, চতুর্থ প্রজন্মের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাস। আলোচনা চলাকালীন, এটি লক্ষ করা হয়েছিল যে রাশিয়ান পারমাণবিক শিল্পের জন্য একটি কৌশলগত কাজ হল জয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট অব ইনোভেটিভ টেকনোলজি, যার মধ্যে রয়েছে ছোট মডুলার রিঅ্যাক্টর এবং চতুর্থ-প্রজন্মের রিঅ্যাক্টর।

উপরন্তু, রাশিয়ায় পারমাণবিক শক্তির উন্নয়নের জন্য নতুন কাঠামো চিত্রিত করা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, রোসাটমের মেশিন-বিল্ডিং বিভাগ এবং রাশিয়ার এশীয় অংশে প্রিমোর্সকি টেরিটরির সরকার, ভাসমান পাওয়ার ইউনিট (এফপিইউএস) নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার সম্ভাব্যতা মূল্যায়নে সহযোগিতা করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ জানান, “অ্যাটমএক্সপো-২০২৪ এর একটি বৈসাদৃশ্য রয়েছে – এটি প্রথম সম্পূর্ণ কার্বন-মুক্ত ফোরাম। ফোরামের সমস্ত এনার্জি, গ্রিন এনার্জি সোর্স থেকে এসেছে। ফোরামের মূলমন্ত্র: ‘ক্লিন এনার্জি, ক্রিয়েটিং দা ফিউচার টুগেদার।’ এবং দুটি কিওয়ার্ড আছে: ফিউচার এবং টুগেদার। শুধু সকলে একসাথে এক হয়ে, দেশের সীমানার গণ্ডি পেরিয়ে, আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ গ্রহের জন্য একটি পরিচ্ছন্ন, পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদন করতে পারি।”

বর্তমানে, রোসাটম তাদের দেশের এনার্জি পোর্টফোলিওতে নিউক্লিয়ার এনার্জির অনুপাত বাড়ানোর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে। অ্যাটমএক্সপো-২০২৪ শিল্পের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের গ্রহের টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখে এমন একটি এনার্জির ল্যান্ডস্কেপ তৈরির বিষয়ে আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে কাজ করেছে।