![](https://bdnuclear.energy/wp-content/uploads/2022/06/DA0F1D2F-AFFC-4EC2-814F-0E8C9A2A129C-scaled.jpeg)
বাংলাদেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার অন্তর্গত রূপপুরে অবস্থিত। পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নির্মান কাজ প্রায় শেষের দিকে। নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুইটি ইউনিট থেকে প্রায় ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদন শুরু করলে এর সাহায্যে ঈশ্বরদীসহ পুরো দেশবাসী উপকৃত হবে। তবে নির্মানকাজ শুরু থেকে প্রকল্প এলাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ বিভিন্ন ভাবে উপকৃত হচ্ছে। এমনি এক উন্নয়নের অংশিদার হয়েছে “পারমাণবিক তথ্য কেন্দ্র”, ঈশ্বরদী এবং এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা এবং সাধারণ জনগনকে বিজ্ঞান মনস্ক করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ঈশ্বরদী পারমাণবিক তথ্য কেন্দ্র। এরই অংশবিশেষ হিসেবে বৃহত্তর রাজশাহী বিভাগের তিনটি ও পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঈশ্বরদী উপজেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম–দশম শ্রেনী ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেনীর বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে গত ৩১–০৫–২০২২ ইং থেকে শুরু হয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড।
প্রাথমিক পর্যায়ে চারটি ভিন্ন ভ্যেনুতে উদ্যোমী প্রায় এক হাজার শিক্ষ্যার্থীর অংশগ্রহনের মাধ্যমে শুরু হয় এই প্রতিযোগিতা। বাছাই পর্বের প্রক্রিয়া শেষেফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুসারে ছাত্র ছাত্রীদের চূড়ান্ত ধাপে অংশগ্রহনের সুযোগ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে আরও তিনটি ভ্যেনুতে প্রথম ধাপে বাছাইকৃতদের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পদার্থ, রসায়ন এবং গণিত এই তিন ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে এবং স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাবিজ্ঞানের তিনটি বিষয়ে সমন্বিতভাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। চূড়ান্ত ধাপের সকল ভ্যেনু ঈশ্বরদীতে হওয়ায় শীক্ষার্থীদের বিনা খরচে যাতায়তের সুব্যবস্থা করা হয়।
এখানে বলে রাখা ভাল যে, প্রশ্নপত্র প্রনয়ন ও মূল্যায়ন এবং ফলাফল নির্ধারণসহ সকল কিছু রাশিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ নিউক্লিয়ার ইউনিভার্সিটির চারজন অধ্যাপকের সরাসরি তত্তাবধানে অনুষ্ঠিত হয় এবং এরই লক্ষ্যে গত ০৯–০৬–২০২২ ইং তারিখ হতে ঈশ্বরদীতে অবস্থান নেন উক্ত অধ্যাপকগণ।
সকল বিষয়ের ফলাফল প্রকাশের পর ১২ জুন ২০২২ ইং (রবিবার) বিকেলে ঈশ্বরদীর প্যাভিলিয়ন রেঁস্তোরায় “প্রিসাইজ এনার্জি ২০২২” অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করার লক্ষ্যে এক মনোঙ্গ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন রোসাটমের আটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের হেড অফ কমিউনিকেশন নিনা ডেমেন্সোভা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাংলাদেশ পক্ষের সাইট ডিরেক্টর প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম, রোসাটমের দক্ষিণ এশিয়ার পি আর ম্যানেজার সেনিয়া ইয়েলকিনা, এনার্জি অব দ্যা ফিউচারের ডেপুটি জেনারেল ডাইরেক্টর আলেক্সান্দার বেবাকভ, রাশিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ নিউক্লিয়ার ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. আলেক্সান্দার নাখাবভ।
পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিত বিভাগ থেকে প্রথম, দ্বিতীয়, এবং তৃতীয়সহ ১০ জন করে মোট ৩০ জন প্রতিযোগিকে পুরষ্কৃত করা হয়। অপরদিকে স্কুল–কলেজ বিভাগ হতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়সহ মোট ১০ জনকে অর্থাৎ সর্বমোট ৪০ জনকে পুরষ্কৃত করা হয়।
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকারী সংস্থা রোসাটম, এটমষ্ট্রয় এক্সপোর্ট, রাশিয়ার মেফিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সহযোগিতায় রাশিয়ার ‘এনার্জি অব দ্যা ফিউচার’ এর পাবলিক ইনফরমেশন সেন্টার (পিআইসি) এই অলিম্পিয়াডের আয়োজন করে। প্রতি বছর ‘এনার্জি অব দ্যা ফিউচার’ এই অলিম্পিয়াডের আয়োজন করে। শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করাই হল এই প্রতিযোগীতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।